২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা : তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস
- আপলোড সময় : ০২-১২-২০২৪ ০৯:৩১:৪০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০২-১২-২০২৪ ০৯:৩১:৪০ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় হাইকোর্টে মৃত্যুদ- অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স), আপিল এবং জেল আপিলের রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আইনজীবীরা জানান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ৩১ অক্টোবর আপিল শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, রাসেল আহমেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার।
লুৎফুজ্জামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ দ-িত বেশ কয়েকজনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা। হামলায় ২৪ জন নিহত ও তিন শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। তবে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার মামলা দুটির তদন্তের গতি ভিন্ন খাতে নিতে চেষ্টা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলার নতুন তদন্ত শুরু হয়। ২০০৮ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলার অধিকতর তদন্ত করা হয় এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে স¤পূরক অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদ- এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়। এছাড়া, ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- ও অর্থদ-ের আদেশ দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর মামলার নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়, যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এর পাশাপাশি দ-িত আসামিরা আপিল ও জেল আপিল দাখিল করেন।
হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি গত ৩১ অক্টোবর শুরু হয় এবং ২১ নভেম্বর শুনানি শেষ হয়। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, রাসেল আহমেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার অংশ নেন।
আসামিদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরসহ আরও কয়েকজন শুনানি করেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান দাবি করেন, মামলার দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে যাঁদের আসামি করা হয়েছে, সেটি আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, তা সরাসরি জজ আদালতে দায়ের করা হয়, যা ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, যদি অভিযোগ যথাযথভাবে প্রমাণিত না হয়, তবে সব আসামি খালাস পেতে পারেন।
আইনজীবী শিশির মনির উল্লেখ করেন, মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় জবানবন্দির ভিত্তিতে অধিকতর যে তদন্ত হয়েছে, সেটিরও আইনগত ভিত্তি নেই। নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন এবং আসামিদের খালাসের আবেদন জানান।
এই মামলার শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ-সংক্রান্ত মামলাগুলো রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় মামলাগুলো রবিবার কার্যতালিকায় উঠে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ